২০১৮ সালটি ক্যালেন্ডার থেকে বিদায় নেবে কয়েক দিন পরই। এরই মধ্যে পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে নতুন বছরের। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে চলছে নানা রকমের প্রস্তুতি। নতুন বছরে নিজেকে নতুনভাবে প্রস্তুত করতে চান অনেকেই। স্বপ্ন, ভালোলাগা ও মনের ইচ্ছার হাত ধরে কাজ করার পরিকল্পনা করেন অনেকেই। এসব পরিকল্পনা মনের মধ্যে অথবা কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থেকে যায় অনেক সময়ই। খুব কম সময়ই বাস্তবায়ন হয়।
বর্তমানের চাকরি জীবনে আপনি কি সুখী? এমন প্রশ্নের উত্তর অনেকের কাছে হ্যাঁ আবার অনেকের কাছে না। তাই এই মুহূর্ত থেকেই সামনের বছরের জন্য নিজেকে তৈরি করা প্রয়োজন। পছন্দনীয় কাজের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রাখুন। কারণ অপছন্দনীয় কাজের মাধ্যমে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয় না। বলাই বাহুল্য, যে কাজের প্রতি নিজের ভেতর থেকে উৎসাহ ও আগ্রহ তৈরি হয় না, সে কাজের ক্ষেত্রে নিজের ভবিষ্যৎ খুব একটা উজ্জ্বল হবে না। তাই এখন থেকেই নিজের স্বপ্ন ও ভালো লাগার কাজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করুন। কথাগুলো কেন বলা হচ্ছে? ব্যাখ্যাগুলো কিন্তু খুবই সরল।
ভবিষ্যতে অনুশোচনা : একদম শেষ বয়সে যাওয়ার পর কোনো একসময় আপনার মাঝে অনুশোচনা বোধ কাজ করবে। কেন নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করলাম না। কারণ পুরো জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখবেন আপনার অর্জনের খাতা একেবারেই শূন্য! নিজের স্বপ্নের পথে কাজ করলেই যে আপনি সফল হবে। অনেক কিছু অর্জন করবেন তা কিন্তু নয়। তবে নিজের মাঝে কোনো অনুশোচনা থাকবে না।
তুলনামূলক বেশি সুুখী থাকবেন : বর্তমানে যে চাকরিতে আছেন তা নিয়ে কি আপনি সুখী? উত্তর না হলে কী করা প্রয়োজন সেটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন। একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। বর্তমানের চাকরিতে অসুখী থাকার চাইতে নিজের ভালো লাগার কাজ নিয়ে সুখী থাকতে পারাটাই অনেক বড় কিছু। অন্যদের থেকে আপনার ভালো লাগার কাজের ক্ষেত্রে আয় তুলনামূলক কম। কিন্তু আপনার জীবনযাত্রার মানে কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ নিজের কাজ নিয়ে সুখী। একজন সুখী মানুষের কাছে পৃথিবীর কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাওয়া : একটা ব্যাপার মনে রাখা জরুরি। সবকিছুর চাইতে নিজের ভালো থাকার ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। নিজের স্বপ্ন ও ভালো লাগার কাজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে। যে কাজটি আপনাকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। আপনার স্বপ্ন রয়েছে যে কাজের মাঝে। যে কাজটি আপনার জীবনের মোড়কে ঘুরিয়ে দিতে পারে সেই কাজকে হেলাফেলা করা একদম উচিত নয়।
জীবন হয়ে উঠবে অর্থবহ : বেশিরভাগ চাকরিজীবীর কাছে জানতে চাইলে নিরাশ হয়ে বলবেন, জীবনটা একেবারেই অর্থহীন। কারণ প্রতিদিনের জীবনে তাদের কাছে কোনো অর্থ নেই। কোনো স্বপ্ন নেই। কোনো ভালো লাগা নেই। কারণ নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে চাকরি করছেন। দিনের পর দিন এভাবে পার করার ফলে জীবনটা তাদের কাছে অর্থহীন হয়ে উঠেছে। কিন্তু আপনি যদি নিজের স্বপ্ন ও ভালোবাসার কাজ নিয়ে এগিয়ে যান, তবে প্রতিটি দিন আপনার কাছে অর্থবহ হয়ে উঠবে। তিলে তিলে বাস্তবায়ন হবে আপনার স্বপ্ন। জীবন হবে রঙিন।
ভবিষ্যতে কী হতে পারে : নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। আপনার পছন্দের কাজের পাশাপাশি পার্টটাইম বা ফুলটাইম কাজ করার প্রয়োজন হতে পারে। অথবা আপনার ভালো লাগার কাজটি নিয়েই ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেতে পারেন। দারুণ সুখ্যাতি অর্জন করতে পারেন। কেউ জানে না ভবিষ্যতের কথা! তাই কোনোভাবেই নিরাশা হওয়া যাবে না। এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
খুবই কঠিন : নিজের স্বপ্ন ও ভালো লাগার কাজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক ধাপগুলো হবে খুবই কঠিন ও বন্ধুর। নিজের চারপাশের সকলের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার আশা ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। কাজ শুরু করার পরে প্রথম দিকে আয় করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। অনেক সময় তো আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেশি হবে। এমন অবস্থায় হেরে যাব শব্দটি মাথায় আনা যাবে না। শুধু নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এ সময়ে।
তন্ময় কুমার রায়